বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প। কীভাবে তাঁতে কাপড় বোনানো হয় দেখুন।
Автор: সোনালী গ্রাম বাংলা (ShoNali GraM BanGlA)
Загружено: 2022-08-08
Просмотров: 1162
Описание:
আপনার সফলতার গল্প তুলে ধরতে যোগাযোগ করুনঃ 01773-407000।
বাংলাদেশের তাঁত শিল্প ও তাঁত শিল্পীরা আমাদের ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক।এই শিল্পের সাথে জড়িত আছে এদেশের সংস্কৃতি। বাংলাদেশের তাঁত শিল্পের ক্রম-বিবর্তনের ইতিহাস নিয়ে নানা মত রয়েছে তবে এই শিল্পের ইতিহাস অনেক প্রাচীন, এই নিয়ে কোন দ্বিমত নেই। সাত শতকের চৈনিক বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী হিউয়েন-সাং (হুয়ানসাং) ও তের শতকের মরক্কোর বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা’র ভ্রমণ কাহিনীতে এবংউনিশ শতকের বিখ্যাত গবেষক জেম্স ওয়াইজ এর গবেষণায় বাংলার বস্ত্র ও তাঁত শিল্পের উল্লেখ রয়েছে। তাদের ঐতিহাসিক বিবরণ বাংলার লোক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে ব্যাপক সহায়তা করে। এই দিকগুলো বিবেচনা করে বলা যায় এই বাংলার তাঁত শিল্পের ঐতিহ্য অতি প্রাচীন এটি আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। প্রচলিত বিভিন্ন কিংবদন্তি অনুসারে আদি বসাক সম্প্রদায়ের তন্তুবায়ী গোত্রের লোকেরাই হচ্ছে এদেশের আদি তাঁতি। এরা সিন্ধু অববাহিকা থেকে পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ ঘুরে চলে আসেন বাংলাদেশে। আবহাওয়া ও অন্যান্য প্রতিকূলতার ভীড়ে বার বার বিভক্ত হয়ে, দলে দলে ছড়িয়ে যায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। আরো কথিত আছে হিন্দু তাঁতীদের মৌলিক উপাধিই ছিল বসাক আর মুসলিম কারিগর বা তাঁতীদেরকে বলা হতো জোলা। এক কালে এদেশের বেশিরভাগ এলাকা জুড়ে বসাক শ্রেণীর বসবাস ছিলো। তারা বসাক সমিতির মাধ্যমে কাপড়ের মান নিয়ন্ত্রন করতেন ও অনভিজ্ঞ তাঁতিদেরকে প্রশিক্ষণ দিতেন। বসাক ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরাও তাঁত শিল্পের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন। তারা বসাক তাঁতিদের মতোই দক্ষ হয়ে উঠেন। রাজশাহী, টাংগাইল, সিরাজগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লাসহ আরও অন্যান্য অঞ্চলেও বসাক, যূগী বা দেবনাধ সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের তাতিঁরা তাতঁ শিল্পের প্রসার ঘটায়। বংশানুক্রমে যুগের পর যুগ তারা তাঁত বুনে আসছেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশভাগ ও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক বসাক ও হিন্দু সম্প্রদায়ের তাঁতি ভারত চলে যান।নানাবিধ টানা-পোড়েনে, অভাব-অনটনে, দূর্যোগে, বিপ্লবে, দ্বন্দ সংঘাতে, উত্থান-পতনের কালের সাক্ষী হয়ে আছে বাংলার তাঁতশিল্প।
আদিকাল থেকে ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে চলে আসা আমাদের তাঁতশিল্প দেশে ও বিদেশে সমভাবে সমাদৃত। এই অঞ্চলে উৎপাদিত ফুটিকার্পাস এর কারনে একসময় হাতে কাটা সূক্ষ্ম সুতা হত এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে হস্তচালিত তাঁতের কাপড় বোনা হত। সুলতানি ও মোগল যুগের উত্তরাধিকারী হিসাবে এখানকার তাঁতিদের বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ আলাদা । এক সময় এদের পূর্বপুরুষরাই মসলিন, জামদানি ও মিহিসুতি বস্ত্র তৈরি করত। দিল্লির মোগল দরবার থেকে বৃটেনের রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত এই মসলিনের কদর ছিল বেশ। বাংলার জগদ্বিখ্যাত মসলিন সারা বিশ্বে বাংলার গৌরব বৃদ্ধি করেছিল।এখনো দেশের তাঁত শিল্পীদের তৈরি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাওয়েঁর ঐতিহাসিক জামদানী, রাজশাহীর রেশমী বা সিল্ক, টাঙ্গাইলের শাড়ি, কুমিল্লার খাদি বা খদ্দর, সিরাজগঞ্জের লুঙ্গী ও গামছা, ঢাকার মিরপুরের বেনারসি, সিলেট ও মৌলভীবাজারের মনিপুরি তাতঁ ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটির তাতেঁর রয়েছে বিশ্ব ব্যাপী চাহিদা ও কদর।
বাংলাদেশের হস্তচালিত তাঁত শিল্প এদেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্পবা লোকশিল্পও এটি। দেশীয় হস্তচালিত তাঁতশিল্প দেশে-বিদেশে বিশেষ স্থান দখল করেছিল। তাঁতশিল্পীরা অসামান্য অধ্যবসায়, পরম মমতায়, যুগযুগ ধরে লালিত, বংশপরম্পরায় অসাধারন দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বয়ন উৎকর্ষতায় এ দেশের তাঁতশিল্পকে তুলেধরেছিল এক অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতেও এই শিল্পের ভূমিকা অপরিসীম। অতীতে এবং বর্তমানে তাঁত শিল্পে উৎপাদিত পোশাক রপ্তানি করা হয় বিশ্ব বাজারে। এই শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ লোক নিয়োজিত রয়েছে।তবে ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক আমাদের এই তাঁতশিল্প আজ মৃতপ্রায়।বহুকালের অসম করারোপ, তাঁতের উপর নানা বিধি-নিষেধ, মহাজনি কারবার, পুঁজি সংকটসহ নানা আগ্রাসনের কাছে তাঁতী সমাজ বড় অসহায়। এই সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতায় এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা কষ্ট সাধ্য। দিন দিন এই তাঁতশিল্পে সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে, অভাব অনটনের জন্য বংশ পরম্পরা ত্যাগ করে অনেক তাঁতিপরিবার এই শিল্প থেকে সরে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। দক্ষ কারিগর স্বল্পতাও এখন এই শিল্পের অন্যতম অন্তরায়। অনেক অঞ্চলেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশীয় তাঁতশিল্প।
এই অসম প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা হস্তচালিত তাঁতশিল্পের জন্য এক কঠিনপরীক্ষা। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক পৃষ্ঠপোশকতা ও ব্যবসায়ী পরিকল্পনা ও সরকারী-বেসরকারী সহযোগিতা। আরও প্রয়োজন দেশীয় তাঁত বস্ত্রের মানউন্নয়ন, পেশাগত শিক্ষা ও উন্নত প্রশিক্ষণ। এই পরিবর্তিত ও আধুনিক রুচিবোধের সাথে সমন্বয় সাধন, দক্ষ কারিগর তৈরী, দেশীয় তাঁতশিল্পের জন্য সময়ের দাবী। ‘বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড আইন-২০১৩’ এই শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। দেশীয় প্রাচীন তাঁতবস্ত্রের বিচিত্র নকশা, আমাদের নিজস্ব রং প্রস্তুত প্রণালী এবং তাঁত সংক্রান্ত বহু প্রয়োজনীয় তথ্য ও বিশ্লেষণ এখনও অপ্রতুল। এইসব বিভিন্ন সংকট ও সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশের তাঁতশিল্প নিয়ে প্রতিনিয়ত নানা গবেষণা চলছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পের সনাতনী নকশাগুলোকে পুন:ব্যবহার নিয়ে কাজ করছে অনেক প্রতিষ্ঠান। জনসাধারনের দেশীয় বস্ত্রের প্রতি ভালোবাসা, আবেগ ও বোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে এই অসম প্রতিযোগিতায় দেশীয় তাঁতশিল্পের অবস্থান সুদৃঢ় করা সম্ভব। সরকারী-বেসরকারী পৃষ্ঠপোশকতায়, বস্ত্র ও তাতঁশিল্পী সহ দেশী-বিদেশী গবেষক এবং সকলেরআন্তরিক চেষ্টা ও সাধনায় দেশীয় ঐতিহ্যের তাঁতশিল্প মন্দা কাটিয়ে ফিরে পাবে তার হারানো অতীত এটাই আজকের প্রত্যাশা।
#TraditionalWeaving IndustryofBangladesh
#দেশীয়_ঐতিহ্যে_তাঁতশিল্প
#bangladeshtatshilpo
#shonaligrambangla
Повторяем попытку...

Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: