শীলবাড়ির হেঁশেল | Shilbarir Heshel
Автор: LETON RASHID
Загружено: 2025-11-14
Просмотров: 60
Описание:
ঘন সবুজের মাঝে প্রকৃতির সাথে নিজের মত করে কিছুটা সময় কাটাানোর মতো নিরিবিলি একটা জায়গা, যেখানে কোনো কোলাহল নেই, শহুরে হাঁসফাঁস নেই, যেখানে আসলে মুহূর্তেই হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে নগরজীবনের যত কোলাহল।
শহরের ছকবাঁধা জীবন, কর্মব্যস্ত দিন আর একেঘেয়ে পরিবেশ থেকে কিছুটা সময়ের জন্য প্রাকৃতিক আবহে থাকতে আমরা আজ চলে এসেছি ঢাকার অদূরে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়নের নন্দনকোনা গ্রামে অবস্থিত শীলবাড়ির হেঁশেলে।
আজকের এই পর্বে শোনাবো একদিনের শীলবাড়ি হেঁশেলের সেই ভ্রমন গল্প।
গল্পের শুরুটা হয় বৃষ্টিস্নাত সুন্দর এক সকালে, ঢাকার দোয়েল চত্বর থেকে। ভোরের এই বৃষ্টি যেন চমৎকার একটি দিনের পূর্ভাবাসই দিচ্ছিলো। এই যে আমাদের গাড়ি চলে এসেছে।
সহকর্মীরাও যার যার মত করে গাড়িতে তাদের পছন্দে সীটে পছন্দের মানুষের সাথে বসে পরেছে। ৩৪ সীটের কোস্টার আমাদের নিয়ে শীলবাড়ির উদ্দেশ্যে চলছে, সাথে চলছে গল্প, আড্ডা, গান আর র্যাফেল ড্রয়ের টিকিট বিক্রি।
ঢাকার গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে শীলবাড়ির হেঁশেলের দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। যেতে হবে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক ধরে। বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতু, কেরানীগঞ্জ পার হওয়ার পর আবদুল্লাহপুরে এসে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বেরিয়ে বাঁ পাশের সড়ক ধরে যেতে হবে। ধলেশ্বরীর দুটি সেতু পার হয়ে নিমতলা বাজার পেরিয়ে বাঁয়ে বীরতারার রাস্তা ধরতে হবে। বেশ কিছু দূর পর কাউকে জিজ্ঞেস করলে নন্দনকোনা বাজারের পথ দেখিয়ে দেবে। এখানেই শীলবাড়ির হেঁশেল।
শীলবাড়ি হেঁশেলের দুইটি শাখা। ২য় শাখাটা একটু বড় এবং বেশি সুন্দর। কিন্তু সমস্যা হলো দ্বিতীয় শাখায় যেতে হলে প্রথম শাখার সামনে গাড়ি রেখে ১৫-২০ মিনিটের পথ হেঁটে যেতে হবে। এই কষ্টটুকু মেনে নিতে পারলে তবেই দেখা মিলবে সবুজ অরণ্যের।
এখানে আগে শীল সম্প্রদায়ের মানুষদের বাড়ি ছিল। এই গ্রামেই আমিনা হকের নানাবাড়ি। নব্বইয়ের দশক থেকে একটু একটু করে এই এলাকায় জমি কিনেছেন তিনি। তবে বাড়ির নামটি বদলাননি। তাই এর নাম ‘শীলবাড়ির হেঁশেল’।
এ বাড়ির প্রতিটি কোনায় আছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। আভিজাত্যে ভরা পঞ্চাশ দশকের বৈঠকবাড়ির আমেজ রয়েছে এখানে। রয়েছে পরিবেশবান্ধব কাঠের খোলা কটেজ। ইন্টেরিয়রের পুরো থিমটাই সাদা ও হালকা রঙে করা। ভেতরে রয়েছে সোফাসহ কাঠের বৈচিত্র্যময় সব আসবাব, আয়না। বেশ কিছু বইও রয়েছে অবসরে আনন্দ দিতে। দেশীয় ঐতিহ্যবাহী পণ্যের রুচিশীল সাজসজ্জা এখানে আসা দর্শনার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার পরও এক নস্টালজিয়ায় আটকে রাখে।
একদমই গ্রামীণ আবহ। গাছগাছালিতে ছাওয়া একটি বাড়ি। প্রচুর গাছ রয়েছে এখানে। পুরো বাড়িতেই মাটির বড় বড় পাত্রে পানিতে ভাসছে গাঁদা, গোলাপ, জারবারা, জবা, নয়নতারা, জারুল, সন্ধ্যামালতিসহ বিভিন্ন রকম ফুল। আর প্রতিটি কোণে প্রচুর অর্কিড ও মিনিয়েচার গাছ আপনাকে এক সবুজ ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখবে।
এর সামনেই রয়েছে বেশ বড় পুকুর আর শস্যখেত। বর্ষার পানিতে টইটুম্বুর থাকে চারিদিক। তখন নৌকা চালিয়ে অনেকদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। কাঠ, খড়ি ও শোলা দিয়ে পুরো বাগানবাড়ির চারদিকে বেষ্টনী করা হয়েছে। এক দারুণ ইকোরিসোর্টের আবহ আপনি পেয়ে যাবেন এখানে।
বৃষ্টিতে অন্য রূপ দেখতে পাওয়া যায়। ঝুম বৃষ্টিতে পুকুরে পা ডুবিয়ে আরাম করে ভেজা যায়, দোলনায় দোল খেতে খেতে আনমনে ভাবা যায় জীবনটা আসলেই সুন্দর! সব ভুলিয়ে দিয়ে প্রাকৃতিক আবহ মুহূর্তে একধরনের প্রশান্তি নিয়ে আসে।
অবারিত মাঠ গগন ললাট চুমে তব পদধূলি
ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় ছোট ছোট গ্রামগুলি।
আহা!
এই বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য শীলবাড়ি আসতেই হবে।
আইফোন বলো আর ডিএসএলআর এই সৌন্দর্য ধারণ করা সম্ভব না।’
যেমন নান্দনিকভাবে সাজানো পুরো জায়গাটি, তেমন এখানকার দারুণ মজার সব খাবার। শীলবাড়ির হেঁশেলের অন্যতম বিশেষত্বই হলো এখানকার দারুণ মজার রান্না। সব খাবার রান্না হয় মাটির চুলায়। স্থানীয় গ্রামীণ রাঁধুনিরাই রান্না করেন এখানে।
সকালবেলা নানা রকম পিঠা, ছিটা রুটি দিয়ে হাঁসের মাংস, ভর্তা দিয়ে বউখুদা, পাটিসাপটা। এখানে খাওয়ার পানি হিসেবে দেওয়া হয় নিজস্ব টিউবওয়েলের পানি। গ্রামের নারীরা রান্না করেন। রান্নার সব উপকরণ স্থানীয়। এই হেঁশেল পরিচালনা করে স্থানীয় তরুণেরা, যাঁদের সবাই কলেজের ছাত্র।
এর ফাঁকে ঘুরে দেখতে পারেন সবুজ নন্দনকোনা গ্রাম। আমরাও বেরিয়েছিলাম গ্রাম দেখতে। কি চমৎকার তাদের আতিথেয়তা। এর
দুপুরবেলার ভোজে রোস্ট, পোলাও, আলু গরুর মাংসের ঝোল তরকারি, মুরগির কোর্মা, সবজি, মাছ ভাজি, বিভিন্ন রকমের ভর্তা, ডাল, যে যা খেতে চান এখানকার হেঁশেলে তা-ই রান্না হবে। প্রতিটি খাবার দেশি ও সুস্বাদু।
বিকেলের খাবার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল পাকোরা ও চা।
শীলবাড়ির হেঁশেলে যেতে হয় দল বেঁধে। ন্যূনতম ১০ জন হলেই বুকিং দিয়ে চলে আসতে পারেন শীলবাড়ির হেঁশেল। সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা থাকে শীলবাড়ির হেঁশেল। এক দিনে একটি দলকেই বুকিং দেওয়া হয়। তাই পুরো আয়োজনটা থাকে কেবল তাঁদের জন্যই। সময়সীমা হলো সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৫টা। দলের সদস্যসংখ্যা যা-ই হোক, তিনবেলা খাবারসহ খরচ পড়বে জনপ্রতি ২৩০০-২৫০০ টাকা। আগে থেকে বুকিং দিয়ে যেতে হয় শীলবাড়ির হেঁশেলে। ফোন: ০১৮১৬৪০৩৭৯১।
১০৫ কাঠা জমির ওপর গড়ে ওঠা শীলবাড়ির হেঁশেলে আসলে দাদার বাড়ি, নানার বাড়িতে বেরাতে যাওয়ার অনুভূতি নিয়ে পুরো একটা দিন কাটানোর ব্যবস্থা রয়েছে। এককথায় পরিবারের সবাই বা বন্ধুরা মিলে অসাধারণ একটি ছুটির দিন কাটাতে চাইলে এ জায়গাটির জুড়ি নেই। কর্মব্যস্ততা আর কোলাহলের শহর ছেড়ে, জীবনের সব নেতিবাচকতা ভুলে এক দিনের জন্য হারিয়ে যেতে চাইলে আপনিও চলে আসতে পারেন স্নিগ্ধ মায়াবী শীলবাড়ির হেঁশেলে।
#শীলবাড়ির_হেঁশেলে #shilbarir_hesel
Повторяем попытку...
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: