শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ি রাস্তা ও দুইপাশের চা বাগানের অপরূপ সুন্দর দৃশ্য

Описание: বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় অধিকাংশ চা বাগানই সেখানে অবস্থিত। শ্রীমঙ্গলের বিশাল অঞ্চল জুড়ে রয়েছে চা বাগান। যার কারণে শ্রীমঙ্গল ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে একটি জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। শ্রীমঙ্গলের আয়তন ৪৫০ বর্গকিলোমিটার।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চা উৎপাদন হয় মৌলভীবাজার জেলায়। এই জেলায় ৯২ টি চা বাগান রয়েছে এবং তার মধ্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় রয়েছে ৪০ টি চা বাগান। এই চা বাগানের সৌন্দর্যময় পরিবেশ দেখার জন্য হাজার হাজার ভ্রমণপ্রেমী ছুটে আসে।

শ্রীমঙ্গলের চা বাগানের সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করে। মৌলভীবাজার জেলা চায়ের জন্য বিখ্যাত। অনেকে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলাকে চায়ের শহর বলে আবার কেউ কেউ চায়ের রাজধানীও বলে থাকে। শ্রীমঙ্গলে শুধু চা চাষ নয় আরও কিছু চাষ হয় যেমন: রাবার, লেবু ও আনারস।"চা কন্যা" ভাস্কর্য যা আপনি শ্রীমঙ্গলের প্রবেশপথে দেখতে পাবেন এবং এই ভাস্কর্যের সৌন্দর্য মনোমুগ্ধকর। যা সাতগাঁও চা বাগানের সহায়তায় নির্মিত হয়।

আপনি বছরের যে কোনো দিন শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে যেকে পারেন। তবে চিরসবুজ চা বাগান দেখতে হলে মে থেকে অক্টোবর মাসই চা বাগান ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। কারণ মে থেকে অক্টোবর মাস চা পাতা সংগ্রহের কাজ চলে। চা সংগ্রহের অবাক করা দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন আপনার সময় কেটে যাবে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন না। আপনি চাইলে অন্য যে কোনো সময় যেতে পারেন। সবসময় চা বাগানের সৌন্দর্যময় পরিবেশ আপনাকে অবাক করে দিবে।

বাংলাদেশে ১৬৩ টি চা বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় রয়েছে ৯২ টি এবং শ্রীমঙ্গলে ৪০ টি। তাই আপনি মৌলভীবাজার জেলার যেকেনো চা বাগান ঘুরে দেখতে পারেন। তবে আপনি যদি চা বাগানের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ চান তাহলে শ্রীমঙ্গল উপজেলার উঁচু নিচু টিলার চা বাগানগুলো ঘুরে দেখতে পারেন।

শ্রীমঙ্গলের কাছেই চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (BTRI) ভিতর দিয়ে দক্ষিণ দিকে এগিয়ে গেলে ফিনলের চা বাগান দেখতে পাবেন, সেখানে BTRI-এর নিজস্ব বাগান রয়েছে। ভানুগাছ সড়ক ধরে কয়েক কিলোমিটার গেলেই দেখা মিলবে জেরিন টি-এস্টেটের।

এছাড়া লাউয়াছড়ার কিছুটা আগেই ডান দিকের জঙ্গল ঘেরা পথ নিয়ে যাবে নূরজাহান টি-এস্টেটে। এ পথে আরো চমৎকার কিছু চা বাগানের দেখা পাবেন। এ ধরনের চা বাগানের সৌন্দর্য শুধু শ্রীমঙ্গলেই পাবেন। সময় থাকলে শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরত্বের কমলগঞ্জে যাওয়ার পথে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান দেখে যেতে পারেন।

শ্রীমঙ্গলের চা বাগান ঘুরে দেখার জন্য জীপগাড়ি অন্যতম বাহন। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে জীপ ভাড়া ৩০০০ - ৫০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে আবার কোথায় কোথায় ঘুরবেন তার উপর নির্ভর করে ভাড়া নির্ধারণ হয়। সিএনজি ভাড়া ১১০০ - ২০০০ টাকা হয়ে থাকে। তাই অবশ্যই গাড়ি রিজার্ভ করার আগে দরদাম করে নিবেন।

কমলগঞ্জ থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে পাহাড় ঘেরা চা বাগানের মধ্যে সুবিশাল মাধবপুর লেক। মাধবপুর লেক থেকে প্রধান সড়কের ডান দিকের রাস্তা ধরে ধলাই সীমান্ত যাওয়া যায়। সীমান্ত পর্যন্ত এ সড়কের দুপাশে শুধুই চা-বাগান। সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের ফাঁড়ির পাশে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ।

আপনি চাইলে শ্রীমঙ্গল ফেরার পথে নীলকণ্ঠ কেবিনের সাত রং এর চায়ের স্বাদ নিতে পারেন। আপনার হাতে সময় থাকলে চা বাগানের আশেপাশের দর্শনীয় স্থান গুলো ঘুরে দেখতে পারেন।