mala17 11 2024 বগুড়ার শিবগঞ্জে নবান্ন’ ঘিরে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা
Автор: bogura news One
Загружено: 2024-11-18
Просмотров: 57
Описание:
বগুড়ার শিবগঞ্জে নবান্ন’ ঘিরে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা॥ উৎসবের আবির ছড়ায় অর্ধশত গ্রামে
হেমন্ত আলতো পায় শীতের জানান দিয়ে যায়, অখন্ড নীলাকাশে প্রকৃতির স্নিগ্ধতায় অপরুপতা নজর ফেরানোয় দায়। এই অপার সুন্দর্য্যে ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে ঘাসের ডগায় মুক্তা দানার মতো শিশিরের খেলার মুগ্ধতায় সোনাপাকা ধান ক্ষেতে বাতাসের দোলায় কুয়াশার চাদর কাটতে না কাটতেই হেমন্তের উৎসবে মেতে উঠেছিলো বগুড়ার শিবগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রাম। কারণ নতুন ধান কাটার উৎসবের আবির ছড়িয়ে এসেছে যে ‘নবান’র(নবান্না) মেলা, এমন উৎসবের ডাক দিয়ে বর্ণিলতা আর সৌহার্দ্য সম্প্রীতির মধ্যে দিয়ে রবিবার বগুড়ার শিবগঞ্জে হয়ে গেল দিন ব্যাপী ‘নবানের’ মাছের মেলা। এই মাছের মেলা ঘিরে সেখানকার অর্ধশত গ্রামে নামে নামে উৎসবের ঢল। বাড়ি বাড়ি নাইওরে আসাদের আনন্দমুখরতা। শুধু মাছ নয় নবান্ন উপলক্ষে এই আয়োজনে ছিলো গ্রামীন মেলার সকল অনুষঙ্গ। মিস্টিান্ন থেকে নাগর দোলা, চুরি ফিতার দোকান কোন কিছুই বাদ ছিলো না। হেমন্ত মানেই তো নতুন ধান কাটার উৎসব। নতুন ধানের চালে অন্ন মুখে দেয়ার নানা আচার পার্বনের মধ্যে নবান্নের উৎসব থেকে তো বাঙালীকে দুরে সরিরে রাখা যায়না। বাঙালীর যাপিত জীবনে গ্রাম বাংলায় লোকজ মেলা আর নবান্নের উৎসব অবিচ্ছেদ্য। আবহমানকাল থেকে বাঙালীর প্রানের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যের উৎসবের অন্যতম নবান্ন উৎসব। নবান্ন ঘিরে মেলার আয়োজন যেমন অনেক প্রাচীন তেমনি তা ঐতিহ্যের শিকরের বন্ধনেও জড়ানো। নবান্ন ও মেলা কেন্দ্রীক উৎসব এখনো গ্রামীন জীবনে সর্বজনীন উৎসবের আরেক রুপ। নবান্ন উৎসব মিশে আছে বাঙালীর হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে। বাংঙালী সং¯ৃ‹তির নানা বর্ণময় রূপের বহমনতা তুলে ধরে ভিন্নমাত্রার দ্যোতরা আনে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে লোকজ মেলার আয়োজন। শিবগঞ্জের গ্রামে নবান(স্থানীয় ভাবে) নবান্নের মাছের মেলা তেমনি একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব নবান্নের মাছের মেলা। ধর্মবর্ণ মিলেমিশে উৎসবের আবীরে একাকার হয়ে গড়ে উঠে সম্প্রতির মেলবন্ধন হয়ে উঠেছে এই মাছের মেলা, যা চলছে যুগের পর যুগ।
শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দুরে শিবগঞ্জের উথলী বাজারে বসে নবান্নের মাছের মেলা। মেলা প্রাঙ্গন জুড়ে বটগাছ সহ অন্যান্য গাছের ছায়া। ভোরের সুর্য্য রাতের আধাঁর মিলিয়ে দেয়ার আগেই উথলীসহ আশপাাশের এলাকা গুলো থেকে শুরু হয় মেলায় যাওয়ার পালা। আগের রাত থেকেই মেলার পণ্য ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মাছ আসতে থাকে ট্রাকের পর ট্রাক বোঝাই করে। ভোর থেকে মেলা প্রাঙ্গনে শুরু হয় বেচা কেনা। নবান্ন উৎসবের এই মেলায় যে ক্রেতাই আসুক আর তার অন্য কেনাকাটা যাই হোক মেলা থেকে মাছ কেনা চাই। কারণ মাছ না নিলে মেলায় আসা পরিপুর্ণতা পায় না। মুলতঃ নবান্ন উপলক্ষে মাছের মেলা হলেও দই, মুড়ি, চিড়াসহ নানা ধরনের মিস্টান্ন ও নতুন ওঠা সবধরনের সবজিতে ভরে ওঠে মেলা প্রাঙ্গন। কেউ বলেন, মেলার বয়স ৫০/৬০ কেউবা বলেন,প্রায় শত বছরের। আশপাশের প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের নানা ধর্ম ও শ্রেনী পেশার মেলার শিশু কিশোর থেকে সব বয়সীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। অনেকে আসেন শুধু মেলা দেখতে। উথলী গ্রাম ঘিরে আশেপাশের গ্রাম সরকারপাড়া, নারায়নপুর,ধন্দাকোলা,গনেশপুর, দেবীপুর লক্ষীকোলা, গুজিয়া,আকন পাড়া, অর্জুনপুর, গরীবপুরসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম ছাড়াও আশেপাশের উপজেলা গুলো থেকেও লোকজন এই মেলায় আসেন। মেলায় নতুন জামাই অমলেশ সরকার ও ছেলে অমিত কুমারকে নিয়ে আসা বিপুল চন্দ্র মোদক জানালেন, সনাতনধর্মালম্বীদের পঞ্জিকা অনুসারে অগ্রহায়নের প্রখমে এই মেলার আয়োজন শত বছরেরও বেশি। মাছের মেলার কারণে এখন এটি জমজমাট। মাছসহ কেনা দই মিস্টি চিড়াসহ নানা মিস্টান্ন’র সঙ্গে নতুন ওঠা সবজিও কিনবেন। মেলার কেনাকাটায় ব্যয় হবে প্রায় ১৫ হাজার টাকা।মাছ বিক্রেতা প্রদীপ কুমার জানালেন, ৩০ বছর ধরে তিনি মেলায় ব্যবসা করেন। মেলা সনতান হিন্দু ধমালম্বীদের নবান্নের উৎসব পালন উপলক্ষে আয়োজন হলেও এটি সবার। সব ধর্মের মানুষের কাছেই এটি সমান। মেলার ক্রেতা এবং দর্শকদের ২০ শতাংশ সনাতন ধর্মলম্বী। উথলীর এই মেলার উৎসব শুধু মেলা প্রাঙ্গনেই সীমিত থাকে না। আশেপাশের গ্রামে গুলোর বাড়ি বাড়িতে ছড়ায় উৎসবের বর্ণিলতা নিয়ে। প্রতি বাড়িতে জামাইসহ কুটুম আসেন। উপলক্ষ্য নবানের মাছের মেলা। মেলাতে দেড় শতাধিক মাছ বিক্রেতা নানা ধরনের মাছ নিয়ে এসেছিলেন এবার। তবে ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ই জানালেন এবার মাছের দাম বেশি। আমদানিও কিছুটা কম। তারপরেও উৎসবের অংশ হতে ক্রেতাদের মাছ কিনতে উৎহের কমতি ছিলো না।মাছ বিক্রেতা জামাল হোসেন জানালেন,মেলায় এবার ৩/৪ কেজি থেকে ১৮/২০ কেজি ওজনের নানা ধরেনের মাছ ওঠে। প্রতি মাছের দোকানে ৩ লক্ষাধিক টাকার মাছ বিক্রি হয়। সব মিলিয়ে প্রায় ৩ কোটি টাকারও বেশি মাছ বিক্রি হয় এক দিনের এই মেলায়। মাছ কিনতে আসলেও ‘নবান’ উপলক্ষে সনাতন ধর্মলম্বীরা সব নতুন সবজি ও কৃষি পন্য কেনেন মেলা থেকে। মেলায় স্ত্রী ও ছেলে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন পাইকপাড়ার জামাই হাছান আলী। শ^শুর বাড়িতে মেলা উপলক্ষে দাওয়াতে এসেছেন। শ^শুরবাড়ির লোকজন কেনাকাটাসহ মাছ কিনেছেন। অরুণ কুমার ও সান্তনা রানী দাস দম্পতি জানালেন, মেলার জন্য তারা সারা বছর ধরে সঞ্চয় করেন। বাঁেশর ঝুড়ি চালুনের ছোট ব্যবসা তার। তবে মেলায় এসেছেন কেনাকাটার জন্য। জানালেন অন্ততঃ ১০ হাজার টাকার কেনা কাটা করবেন। এর সিংহভাগ ব্যয় হয়েছে মাছ কেনায়। জানালেন বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দিয়েছেন। ৭৫ বছরের বৃদ্ধ জহুরুল দুই ছেলেকে নিয়ে মেলায় এসেছেন। কেনাকাটা করছেন ছেলেরা।তিনি ঘুরছেন। জানালেন শিশু বয়স থেকে তিনি মেলায় আসেন। এখানে আসলেই ভালো লাগে। আগে নিজেই মাছ কিনতেন। এখন ছেলেরা কিনেন।
ভোরের আলো শুরু হওয়ার সঙ্গে মেলা শুরু হলেও বিকাল গড়লেও মেলায় লোকজনের সমাগম আর উৎসবের ঢেউ ছিলো একইরকম। সকল শ্রেনী পেশার মানুষের সম্প্রীতির মিলন কেন্দ্র হয়ে ‘নবানের ’ এই মেলা ।
Повторяем попытку...
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: