দুর্যোধনের ১০টি দুর্বলতা

Описание: গল্প: দুর্যোধনের ১০টি দুর্বলতা(মহাভারত অবলম্বনে)
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে, কৃষ্ণ একবার ভীমকে বলেছিলেন—
“দুর্যোধন যতই শক্তিশালী হোক, তার মধ্যে এমন দশটি দুর্বলতা আছে যা তাকে পতনের দিকে ঠেলে দেবে।”
এই দশটি দুর্বলতার গল্প লুকিয়ে আছে তার আত্মগর্ব, হিংসা আর অন্যায়-নীতিতে।
① অহংকার – নিজের শক্তির অতিরিক্ত গর্ব
দুর্যোধন বিশ্বাস করত—“আমি জন্মগত রাজা! পৃথিবী আমার শাসনেই চলবে।”
এই অহংকার তাকে শিখিয়েছিল অধর্মের পথ।
② হিংসা – পাণ্ডবদের প্রতি চিরশত্রুতা
পাণ্ডবদের সামান্য সাফল্যও তার চোখে বিষের মতো লাগত।
বিশেষত ভীমের শক্তি আর অর্জুনের কীর্তিতে সে দগ্ধ হতো।
③ দুর্নীতি – অন্যায়ের আশ্রয়
সকল সিদ্ধান্তেই ছিল লোভ ও প্রতারণা।
যুদ্ধের আগেই সে ন্যায়কে শতবার লাঞ্ছিত করেছিল।
④ ক্রোধ – রাগের আগুনে বিচারবুদ্ধি হারানো
যে কোনো ছোট কথায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠত।
গুরু দ্রোণও বলেছিলেন—“ক্রোধই তোমার সবচেয়ে বড় শত্রু।”
⑤ অসহিষ্ণুতা – পরাজয় মানতে অস্বীকার
জুয়ার আসরে পাণ্ডবদের হারিয়েও সে শান্ত থাকতে পারেনি।
যা পেয়েছে সেটাকেও অস্থির মনে হারাতে বসেছিল।
⑥ পদলোভ – সিংহাসনের প্রতি অন্ধ আকর্ষণ
রাজশক্তি তার কাছে ছিল জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।
ক্ষত্রিয়ধর্ম, ভ্রাতৃত্ব, মানবতা—সব হারিয়েছিল সেই মোহের নিচে।
⑦ কুটিলমতি – শঠ ও চালাকির পথে হাঁটা শকুনি ছিল তার পরামর্শদাতা।
ছলনাই হয়ে উঠেছিল তার অস্ত্র।কিন্তু সত্যের সামনে সেই অস্ত্র ব্যর্থ হল।
⑧ অপমানপ্রবণতা – দুর্বলদের লাঞ্ছনা
দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের দিনেদুর্যোধনের মুখে শোনা গিয়েছিল—
“অন্ধের ছেলে অন্ধই হয়…!”এই অত্যাচারই যুদ্ধের সূচনা ঘটাল।
⑨ ভুল বন্ধু নির্বাচন – অসৎ শক্তির উপর নির্ভরতা
কর্ণ, ভীষ্ম, দ্রোণ—সবাই তাকে বারবার সতর্ক করেছিলেন।
কিন্তু সে আস্থা রেখেছিল শকুনি ও দুঃশাসনের উপর।
⑩ উরু-অহংকার – শরীরের শক্তিতে অতিরিক্ত বিশ্বাস
তার উরু ছিল তার গর্বের প্রতীক।
সে ভাবত—“ভীম কখনোই আমার উরু ভাঙতে পারবে না!”
এই গর্বই তার মৃত্যুর কারণ হলো।
দুর্যোধন শক্তিশালী ছিল,
কিন্তু তার ভিতরে বাস করত দুর্বলতা ও অন্ধকার।
যুদ্ধের শেষে, কৃষ্ণ বললেন—“অহংকারে জন্ম নেওয়া রাজা
অহংকারেই মৃত্যু বরণ করে।”
দুর্যোধনের গল্প তাই শেখায়—শক্তি নয়,
ধর্মই মানুষের প্রকৃত বর্ম।