Sonargaon Museum Narayanganj , সোনারগাঁওয়ে লোক ও কারুশিল্প , Sonargoan Bioscope
Автор: TravelTech Fun
Загружено: 2018-01-26
Просмотров: 454
Описание:
Description
বায়োস্কোপ, বাংলার হারিয়ে যাওয়া এক ঐতিহ্যের নাম। কাঠের বাক্সে চোখ লাগিয়ে গানের তালে ছবি দেখার দৃশ্য নগরজীবনে আর চোখেই পড়ে না। বায়োস্কোপ দেখাতে রাজশাহী থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এসেছেন আবদুল জলিল মণ্ডল। খঞ্জনি আর গানের তালে বাক্সের ভেতর পাল্টে যায় ছবি। আর তা দেখে যেন গল্পের জগতে হারিয়ে যায় ছেলে বুড়ো সবাই।
বর্তমান সময়ে গ্রামবাংলায় বায়োস্কোপ এমনই বিরল যে, জাদুঘরে রেখে দেয়ার জন্যও অন্তত একটি বায়োস্কোপ কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সোনারগাঁওয়ে লোক ও কারুশিল্প মেলায় সুদূর রাজশাহী থেকে বায়োস্কোপ দেখিয়ে অর্থ উপার্জনের আশায় এসেছেন জলিল মণ্ডল। কৈশোর হৃদয় চুরি করে হারিয়ে যাওয়া এই হঠাৎ খুঁজে পাওয়া বায়োস্কোপ এ কারুশিল্প ও লোকজ উৎসবে। এ মেলায় এলে দেখতে পাবেন হারিয়ে যাওয়া বায়োস্কোপের প্রদর্শন।
বায়োস্কোপের সাথে বাঙালিকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। বিশেষ করে গ্রামবাংলার জনপদে বেড়ে ওঠা মানুষকে তো বটেই। তবে যারা শহরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দী জীবনযাপন করে অভ্যস্ত কিংবা যাদের জন্ম এইমাত্র একযুগ আগে তাদের কাছে হয়তো হাস্যকর এক বোকা বাক্স মনে হবে। কিন্তু বায়োস্কোপ মোটেও হাস্যকর কোনো বস্তু ছিল না কিংবা ছিল না কোনো বোকা বাক্সও!
প্রকৃতপক্ষে বায়োস্কোপ গ্রামবাংলার সিনেমা হল। রঙ-বেরঙের কাপড় পরে, হাতে ঝুনঝুনি বাজিয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচিত ধারা বর্ণনা করতে করতে ছুটে চলত গ্রামের স্কুল কিংবা সরু রাস্তা ধরে। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো তার পেছন পেছন বিভোর স্বপ্ন নিয়ে দৌড়াত গ্রামের ছেলেমেয়েরা। বায়োস্কোপওয়ালার এমন ছন্দময় ধারা বর্ণনায় আকর্ষিত হয়ে ঘর ছেড়ে গ্রামের নারী-পুরুষ ছুটে আসত বায়োস্কোপের কাছে। একসাথে সবাই ভিড় জমালেও তিন কী চারজনের বেশি একসাথে দেখতে না পারায় অপেক্ষা করতে হতো। সিনেমা হলের মতো এক শো, এরপর আবার আর তিন বা চারজন নিয়ে শুরু হতো বায়োস্কোপ।
বায়োস্কোপ দেখানো শুরু করলেই ‘কী চমৎকার দেখা গেল’ বলে ফের শুরু হতো বায়োস্কোপওয়ালার ধারাবিবরণী। আর এই বায়োস্কোপ দেখানোর বিনিময়ে দুই মুঠো চাল কিংবা দুই টাকা নিয়েই মহাখুশি হয়ে ফিরে যেত বায়োস্কোপওয়ালা।
কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে বাংলার বিনোদনের এই লোকজ মাধ্যমটি। টিভি আর আকাশ সংস্কৃতি স্যাটেলাইটের সহজলভ্যতার কারণে আপনা-আপনিই উঠে গেছে বায়োস্কোপ। তবুও কোথাও না কোথাও একজন থাকে। তেমনি একজন আবদুল জলিল মণ্ডল।
রাজশাহী জেলার বাঘমারা থানার চায়ের শারা গ্রামের মৃত বকশি মণ্ডলের ছেলে জলিল মণ্ডল। বাবা বকশি মণ্ডল ৪০ বছর এ পেশায় জড়িত ছিলেন। পরে বাবার উত্তরসূরি হিসেবে ১০-১২ বছর বয়সে জলিল মণ্ডল এ পেশায় আসেন। এরই মধ্যে এ পেশায় ৩০ বছর পার করে দিয়েছেন তিনি। এ পেশার আয়রোজগার দিয়েই দুই মেয়ে, এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে কোনো রকমে তার দিন চলে যাচ্ছে।
বায়োস্কোপ পেশায় তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করেন। একটা সময় ছিল যখন গ্রামগঞ্জের পথেঘাটে হাটবাজারে তিনি ও তার বাবা বায়োস্কোপ দেখিয়ে প্রচুর অর্থ উপার্জন করেছেন। তখন ধান, চাল ও অর্থের বিনিময়ে বায়োস্কোপ দেখাতেন। বায়োস্কোপ দেখানোর বিষয়বস্তু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে বিভিন্ন প্রেমকাহিনী, তারপর যুদ্ধ, বিশ্বের দর্শনীয় স্থান, ধর্মীয় বিষয় ও রাষ্ট্রনায়কদের নিয়ে বায়োস্কোপ দেখানো হতো। এ জন্য তাদের অনেক বেশি জানতে হয়। তারপর সেটা দেখানোর সময় এক এক করে ছন্দ মিলিয়ে বলতে হয়। তাহলেই দর্শক বায়োস্কোপ দেখতে আগ্রহী হয়। তার বাক্সে একসাথে ছয়জন দর্শক বায়োস্কোপ দেখতে পারে।
আবদুল জলিল মণ্ডলের মতে, ঘরে ঘরে টেলিভিশন ও হাতে মোবাইল ফোন চলে আসায় এখন আর আগের মতো এর প্রতি দর্শকের চাহিদা নেই বললে চলে। তবে অনেকেই কৌতূহল নিয়ে এটি দেখতে এগিয়ে আসেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন মেলায় এ বায়োস্কোপ প্রদর্শন করে থাকেন।
তিনি বলেন, ৩০ বছর ধরে গ্রামে গ্রামে গিয়ে বায়োস্কোপ দেখিয়েছেন। এক যুগ আগেও বায়োস্কোপের যে জৌলুশ ছিল, প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় তা আজ বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু জলিল মণ্ডল আর আগের মতো অকেজো জিনিস হিসেবে ছুড়ে দেননি বায়োস্কোপকে। জড়িয়ে ধরে রেখেছেন সন্তানের মতো। মানুষ এই বায়োস্কোপ না দেখলেও যখনই তার মনে চায়, তিনি গ্রামের সরু রাস্তা ধরে বায়োস্কোপ নিয়ে ছুটে চলেন। জলিল মণ্ডল জানেন বায়োস্কোপ এখন আর কেউ টাকা দিয়ে দেখবে না, তার পরও তিনি বায়োস্কোপ নিয়ে বের হয়ে পড়েন। কিছু উপার্জনের আশায় সুদূর রাজশাহী থেকে তিনি ছুটে এসেছেন সোনারগাঁওয়ে লোক কারুশিল্প মেলায়। তিনি জানান, ৩০ বছর ধরে পূর্বসূরিদের এই পেশাকে ভালোবেসে আঁকড়ে ধরে বায়োস্কোপ দেখিয়ে আসছেন তিনি। মনের আনন্দে বায়োস্কোপকে মাথায় তুলে নিলেও একটা সময়ে তা জীবিকা নির্বাহ করার মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এখন আগের মতো মানুষ আর বায়োস্কোপ না দেখায় ৩০ বছর ধরে বাংলার এই ঐতিহ্যকে বহন করে আসা জলিল মণ্ডলও আশাহত, ক্রমাগত আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
তিনি বলেন, এইটা আমার পেশা। ছেলেপেলেদের দেখায় আনন্দ দিতাম। মানুষের কাছে বায়োস্কোপটা ছিল এক মহারহস্যময় ব্যাপার। এটা অনেকের কাছে ছিল জাদুর বাক্সের মতোন। এইটা দিয়াই আমার সংসারটা চলত। এখন আর আগের মতো স্কুলের পোলাপান বায়োস্কোপ দেখে না। বিভিন্ন অনুষ্ঠান হলে পরে আমাকে ডাকে, ওইখানে গিয়ে বায়োস্কোপ দেখাই।
Повторяем попытку...
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: