বিশ্বকাপ উন্মাদনাঃ বাস্তবতা ও কিছু নিবেদন || মুফতি তারেকুজ্জামান (হাফি.)
Автор: Risalat al-Islam
Загружено: 2022-12-04
Просмотров: 50
Описание:
স্ক্রিপ্ট : মুফতি তারেকুজ্জামান (হাফি.)
বিশ্বকাপ উন্মাদনা : বাস্তবতা ও কিছু নিবেদন
-
সমগ্র বিশ্ববাসী এখন ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনায় মত্ত। মাসব্যাপী মাদকতার মতো সমগ্র বিশ্বকে আচ্ছন্ন করে রাখবে। কী মুসলিম আর কী কাফির—সবাই সবকিছু ফেলে রেখে খেলার আপডেট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করবে। পছন্দের দেশের জাতীয় পতাকা টানিয়ে, প্রিয় খেলোয়ারের জার্সি গায়ে দিয়ে সবাই ব্যস্ত সময় পার করবে। কোন দল কবে জিতল, কোন দেশ কখন হারল, কোন খেলোয়ার কেমন পারফরম্যান্স করল—এসব নিয়ে মানুষের উৎসাহের যেন শেষ নেই! শহরে-গ্রামে, পথে-ঘাটে, অলিতে-গলিতে সর্বত্র কেবল এ দৃশ্যই নজরে পড়ে। এভাবেই একটি মাস ফুটবল বিশ্বকাপ পৃথিবীর লক্ষ-কোটি মানুষকে মাতিয়ে রাখবে। জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ভুলিয়ে সবাইকে মাতালের মতো উন্মাদ করে রাখবে।
আশঙ্কাজনকহারে মানুষের অন্তরে এ খেলার গুরুত্ব এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, নিজের প্রিয় দল হারলে কেঁদে বুক ভাসায়, বারবার মূর্ছা যায়; এমনকি কেউ কেউ তো আত্মহত্যা পর্যন্ত করে বসে। অনেক এলাকায় বিভিন্ন দলের সাপোর্টারদের মাঝে সংঘর্ষ হয়, কোথাও মারামারি ও রক্তপাত পর্যন্ত হয়ে থাকে। আসলে এটা এত জনপ্রিয় ও প্রসিদ্ধ হওয়ার পিছনে খেলার নিজস্ব কোনো কারিশমা নেই। এটা এমন আহামরি কোনো বিষয় নয়, যদ্দরুন বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যেতে হবে, খেলোয়ারকে তারকাখ্যাতি দিতে হবে এবং এর পেছনে মিলিয়ন-বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হবে। খেলা তো আরও কতই আছে, যেগুলোতে অনেক কৌশল ও টেকনিক লাগে, সেগুলো কিন্তু অতটা জনপ্রিয় হয় না; বরং বলা যায়, জনপ্রিয় বানানো হয় না।
ফুটবল খেলা জনপ্রিয় হওয়ার মূল চাবি কি তাহলে কিছু মানুষের হাতে? ফুটবলের মধ্যে তাহলে জনপ্রিয়তার মৌলিক কোনো কারণ নেই?? জি, ঠিক ধরেছেন। ফুটবল বলেন বা ক্রিকেট, টেনিস বলেন কিংবা বাস্কেট—এ ধরনের জনপ্রিয় যত খেলা রয়েছে, এগুলো বাহ্যত খেলা হলেও এর পেছনে রয়েছে আরেক খেলা। এসব খেলার নিয়ন্ত্রণ মূলত বিশ্বের মাফিয়া চক্রের হাতে থাকে। তারাই এর পেছনে কাড়িকাড়ি অর্থ বিনিয়োগ করে, আন্তর্জাতিক সব সংবাদমাধ্যম ব্যবহার করে এবং এগুলোর পক্ষে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে মানুষের নিকট প্রিয় করে তুলেছে। এতে তাদের মহৎ কোনো উদ্দেশ্য নেই; বরং এতে রয়েছে কঠিন গোপনীয় এক কূটকৌশল ও ভিন্ন ধরনের আরেক খেলা, যে ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষই উদাসীন।
বিশ্বের ইসলাম-বিরোধী কুফরি শক্তিগুলো মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত ও দ্বীনবিমূখ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আদর্শিক, সাংষ্কৃতিক ও চারিত্রিক—সর্বক্ষেত্রেই তারা মুসলিমদের নামসর্বস্ব মুসলিম বানাতে চাচ্ছে। তাদের টার্গেট হলো, মুসলিমরা নামে মুসলিম থাকলেও চিন্তা-বিশ্বাসে, কাজে-কর্মে ও আচার-আচরণে পুরোপুরি কাফিরদের অনুসারী হবে। তাদের এ অসৎ পরিকল্পনারই একটি অংশ হচ্ছে এসব জনপ্রিয় খেলা। এসব খেলার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর মধ্য থেকে কাফিরদের প্রতি কঠোরতা ও শত্রুতা উঠে যাচ্ছে। উল্টো সেখানে জায়গা করে নিচ্ছে তাদের প্রতি ভালোবাসা, হৃদ্যতা ও দুর্নিবার টান। এটা একজন মুমিনের ইমানের জন্য মারাত্মক হুমকি; অথচ এ ব্যাপারে অধিকাংশ মুসলিমই অসচেতন।
মুসলিমরা অনেক আবেগপ্রবণ এক জাতি। তাদের যে পরিমাণ আবেগ আছে, তা যদি ইসলামের পক্ষে ব্যয় হতো তাহলে ইসলাম আজ সারাবিশ্বে বিজয়ীরূপে প্রতিষ্ঠিত থাকত; যেমনটি ছিল সাহাবিদের যুগে। সে জোশ ও জজবা আজও আছে, কিন্তু তা এখন ব্যবহৃত হচ্ছে কাফিরদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে। আহ! এ জজবার অর্ধেকও যদি ইসলামের পক্ষে হতো তাহলে আজ তারা হতো বিজয়ী বীর আর সারাবিশ্বে মুসলিমদের নির্যাতনের পরিবর্তে তাদের থাকত গৌরবান্বিত শাসন। ইসলামের ইনসাফপূর্ণ শাসনে মুসলিমদের সাথে শান্তিপ্রিয় অমুসলিমরাও পেত নিরাপদ জীবনযাপনের নিশ্চয়তা। অথচ দুঃখজনকভাবে মুসলিমদের এ আবেগ আজ কী জঘন্য খাতে ব্যয় হচ্ছে, কত সস্তায় বিক্রি হচ্ছে, সে ব্যাপারে তাদের কোনো খবরও নেই।
যে উম্মাহ আজ মুসলিম বীরদের ইতিহাস নিয়ে গর্ব করার কথা, যাদের আজ হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টায় ব্যস্ত থাকার কথা, সে জাতি আজ দু'টাকার ফাসিক-কাফির খেলোয়ারদের গল্পে তৃপ্তিবোধ করে, তাদের খেলার রেকর্ড আর দক্ষতা নিয়ে পরস্পরে দ্বন্দ্ব ও মারামারি করে, তাদের ভালোবাসায় নিজেদের সময়, জান ও মাল সব বিলীন করে দেয়! কতটুকু বিবেকশূন্য হলে মানুষ এমনটা করতে পারে!? কতটা বোকা আর বোধহীন হলে তারা এর পিছনে নিজেদের সর্বস্ব ব্যয় করতে পারে!? এতে তাদের না আছে কোনো পার্থিব লাভ, আর না আছে এতে আখিরাতের কোনো কল্যাণ। বরং এতে যে নিজেদের মহামূল্যবান ইমান পর্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে, সে বিষয়েও নেই তাদের কোনো পরোয়া। নির্বিকার উদাসীন এক জাতি!
এ উন্মাদনা তো শুধু কাফিরদের জন্য। এ পাগলামি তো কেবল নির্বোধদের জন্য। এ খেলা তো তাদের জন্য, যাদের জন্য আখিরাতে কোনো অংশ নেই। মুসলিম জাতি তো এমন হওয়ার নয়। তারা তো পার্থিব জগতের মোহে বিভোর নয়। তাদের রয়েছে আল্লাহ ও রাসুল। তাদের রয়েছে কুরআন ও সুন্নাহ। তারা কীভাবে এমন ধোঁকায় নিপতিত হতে পারে? সত্যিকারের মুসলিম কখনো এ ব্যাপারে উদাসীন হতে পারে না। সে কখনও আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশনার বাহিরে যেতে পারে না। সর্বক্ষেত্রেই সে শরিয়তের বিধান খোঁজে। সর্বদাই সে শয়তানের ধোঁকার ব্যাপারে সতর্ক থাকে। কখনও ভুল হয়ে গেলে পরক্ষণেই ভুল বুঝে অনুশোচনায় ভোগে। খাঁটি অন্তরে তাওবা করে আবারও আল্লাহর রহমতের দুয়ারে ফিরে আসে।
হে আমার প্রিয় মুসলিম উম্মাহ, কীসের নেশায় বিভোর তুমি? আজ তুমি বিজাতীয় খেলাধুলার খবর রাখছ; অথচ তোমার জানা নেই যে, সিরিয়ায় তোমার মা-বোনেরা কতটা কষ্টে আছে! আজ তুমি তোমার প্রিয় খেলোয়ারের সাফল্যে আনন্দিত হচ্ছো; অথচ তোমার খবর নেই যে, ইয়ামানের শিশুদের ক্ষুধা-তৃষ্ণার তাড়না কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে! তুমি আজ কাফিরদের ধোঁকায় বিনোদনে মত্ত হয়ে রয়েছ; অথচ এ ব্যাপারে তোমার কোনো খোঁজ নেই যে, কাশ্মীরের মুসলিমরা কী নির্যাতনের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছে! দুনিয়াজুড়ে আজ কেবলই হাহাকার। কোথাও খাবারের অভাব, কোথাও বাসস্থানের সংকট, কোথাও আবার ইজ্জতের নিরাপত্তহীনতা। কিন্তু তুমি কী করছ? হায়, এ তুমি কেমন মুসলিম? তুমি কি জানো তোমার আত্মপরিচয়?
..........
Повторяем попытку...
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: