পর্ব-২১ কর্ম-জ্ঞান-যোগ-ভক্তি কর্মযোগ
Автор: Anandamarga Yoga BD
Загружено: 2020-11-16
Просмотров: 71
Описание:
প্রতিটি কর্মেরই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে, যদি স্থান-কাল-পাত্র অপরিবর্তিত থাকে। তাই আমরা যে কর্মই করিনা কেন ভাল বা মন্দ তার ফল ভোগ আমাদের করতেই হয়। অনেক সময় কর্মের সঙ্গে সঙ্গে ফল ভোগ হয়ে যায়, অনেক সময় হয় না। এই অভূক্ত কর্মফল মনে বীজরূপে থেকে যায়। একে বলে সংস্কার। এই সংস্কার বা অভূক্ত কর্মফল ভোগ আজ, কাল বা ১০/১২ বৎসর পরে বা এজন্মে না হয়ে পরজন্মেও হতে পারে। এই সংস্কার যখন কাল পরিপক্ক হয়, অনুকুল পরিবেশ পায়, তখন মানুষ তার পূর্বকৃত কর্মফল ভোগ করার জন্যে তার সংস্কার অনুযায়ী কর্ম করতে বাধ্য হয়। এখানে তার ইচ্ছা বা অনিচ্ছার কোন মূল্য নেই।
কর্ম দু’ধরণের – প্রত্যয়মূলক কর্ম ও সংস্কারমূলক কর্ম। মানুষ যখন স্বেচ্ছায়, স্বাধীনভাবে কোন কর্ম করে তাকে কলে প্রত্যয়মূলক কর্ম। কিন্তু যেখানে তার কোন স্বাধীনতা নেই, অথচ চাপে পড়ে তাকে বাধ্য হয়ে কাজ করতে হয়, সেই ধরণের কাজকে বলে সংস্কার মূলক কর্ম। যেমন ধরা যাক, কারো ইচ্ছা হলো সে চুরি করবে, সে চুরি করলো। এটা প্রত্যয়মূলক কর্ম। কেননা এই চুরি করা বা না করাটা সম্পূর্ণ ভাবে তার ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। এখন সেই লোকটা ৫/১০ দিন চুরি করার পর একদিন ধরা পড়ল, খুব করে মার খেল। তারপরে জেলে অপমানের দুঃসহ জীবন কাটাতে লাগল, যেটা সে মন থেকে চাইছে না। এটা হলো তার সংস্কারমূলক কর্ম।
প্রত্যেক মানুষের মনে জন্ম-জন্মান্তরের সংস্কার পুঞ্জীভুত অবস্থায় রয়েছে। এই সংস্কার যতক্ষণ না ক্ষয় হচ্ছে ততক্ষণ সে মুক্তি বা মোক্ষ পেতে পারে না। জীব ও শিবের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে এই সংস্কারগত পার্থক্য। এ যেন এক ঘড়া জল সমুদ্রে ডুবিয়ে রাখা আছে। এখন এই ঘড়ার জল ও সমুদ্রের জলের মধ্যে পার্থক্য তৈরী করছে ঘড়াটি। এই ঘড়াটি যদি সরিয়ে দেওয়া যায় তখন ঘড়ার জল ও সমুদ্রের জলের মধ্যে আর কোন পার্থক্য থাকে না। ঠিক তেমনি জীব যদি তার সংস্কার ক্ষয় করতে পারে তাহলে পরমপুরুষের সঙ্গে তার আর কোন পার্থক্য থাকে না। জীব শিব ভাবে সমাহিত হয়ে যায়।
প্রত্যয়মূলক কর্মে, মানুষ কর্ম করে তার স্বাধীন ইচ্ছায়। আর ফলটা প্রাকৃতিক নিয়মেই আসে, ভগবান করে দেন না। অনেক মানুষ বিপদে পড়লে বলে, “হে ভগবান এ কী করলে! এই তোমার মনে ছিল”। ভগবান কিছুই করেন নি। তুমি কুকর্ম করেছ, প্রাকৃতিক নিয়মে এখন তার ফল ভোগ করছো। আর বিপদে পড়ে চিৎকার করে মরছো। তাই কিছু করার আগে ভেবে চিন্তে করতে হবে- কোনটা করণীয়, কোনটা অকরণীয়। কোন কাজটা করলে আমার ভাল হবে, সমাজের কল্যাণ হবে। কোন কাজটা করলে আমার ক্ষতি হবে, সমাজের অকল্যাণ হবে- তা জেনে, বুঝে সেই অনুযায়ী কর্ম করতে হবে। কারণ, কর্মে মানুষের হাত আছে, কর্মফলে নেই। সেটা প্রকৃতির হাতে। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক মানুষকে তার কৃতকর্মের ফলভোগ করতেই হবে।
যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ তাই গীতায় বলেছেন,
কর্ম্মণ্যে বাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।
মা কর্মফলহেতুর্ভূর্মাতে সঙ্গোহস্ত্বাকর্মাণি”।
অর্থাৎ মানুষ তোমার কর্মেই অধিকার রয়েছে, কর্মফলে নেই। ফল প্রাপ্তির জন্য, ফলের দিকে চেয়ে, ফলের লোভে কর্ম করো না। তুমি আসক্তি শুণ্য হয়ে কর্তব্য কর্ম করে যাও। যেহেতু ফলটার ওপর অধিকার থাকছে না, সেহেতু ভেবে, চিন্তে কাজ করতে হবে। কাজটা মানুষের হাতে, তার ইচ্ছা অনুযায়ী করতে পারে। কিন্তু একবার কাজটা করা হয়ে গেলে সেই কর্ম অনুযায়ী কর্মফল ভোগ করতেই হবে। সেই কর্মফলটাকে আর ফেরানো যাবে না। আবার কাজ করে কেউ যদি ফলের জন্যে চিন্তা করতে থাকে, তাতেও কোন লাভ হয় না। কেননা, কর্মের প্রতিফল স্বাভাবিক ভাবে প্রাকৃতিক নিয়মেই আসবে। তাই সঠিক কর্ম জেনে, বুঝে করতে হবে। আর তার জন্যে জ্ঞানের প্রয়োজন। সঠিক জ্ঞান ছাড়া সঠিক কর্ম করা সম্ভব নয়।
অনেক সময় আমরা জানি এই কাজটা করা উচিত, আমরা করি না। অনেক সময় উচিৎ নয় জেনেও আমরা সেই কাজটা করি বা করতে বাধ্য হই। সবাই জানে ধুমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তবু মানুষ জেনে, বুঝে ধুমপান করে। এমনিতর অনেক কাজই আমরা অহরহ করে থাকি যা আমাদের ব্যষ্টিগত বা সামাজিক জীবনে কম বেশী ক্ষতি করে থাকে। আমরা চাইলেও এসব কাজ থেকে বিরত হতে পারি না। কারণ, আমাদের মনের কামনা-বাসনা, ষড়রিপু-অষ্টপাশ সব সময় এই সব খারাপ কাজের দিকে টানতে থাকে। এই সব বৃত্তিগুলি প্রভাবিত হয় আমাদের ত্রুটিযুক্ত অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি থেকে অসন্তুলিত মাত্রায় হর্মোন নিঃসরণের দ্বারা, দুর্বল স্নায়ুতন্ত্র ও ইন্দ্রিয়ের দ্বারা।
তাই সঠিক কর্ম করতে হলে,
*এই সব বৃত্তিসমূহের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে।
*অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি সমূহের ত্রুটি দূর করতে হবে।
*স্নায়ুতন্ত্রকে সবল করতে হবে।
*ইন্দ্রিয়সমূহকে বশে রাখতে হবে।
অভ্যাসযোগ অর্থাৎ অষ্টাঙ্গিক যোগ সাধনার দ্বারাই এসব করা সম্ভব।
আবার কর্মের সঙ্গে মনে ‘আমি করছি’ এই ভাব অর্থাৎ ‘কর্তৃত্বাভিমান’ থাকে। এই ‘আমি করছি’ ভাব মনে কর্মের অহংকার জাগিয়ে দেয়। কেউ হয় তো কাজ করে ভাবে, আমি না হলে একাজ হতোই না। আবার কেউ হয়তো কোথাও ভাষণ দিয়ে ভাবে- কি ভাষণটাই না দিলাম, ইত্যাদি। অর্থাৎ মনের মধ্যে অহংকার জন্মে গেছে। আর “অহংকার পতনস্য মূলম্” অহংকার হলে তার পতন হবেই। এই অহংকারে যখনই সামান্য চোট লাগে তখনই তার মধ্যে ক্রোধ বৃত্তি জেগে ওঠে। এই ক্রোধ বৃত্তি মানুষের বিবেককে নষ্ট করে দেয়। তখন সে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে অঘটন ঘটিয়ে বসে। তাই সাধককে ‘কর্তৃত্বাভিমান’ ত্যাগ করতে হবে। ঈশ্বরকে যন্ত্রী আর নিজেকে যন্ত্র মনে করে কাজ করতে হবে। ...............
Повторяем попытку...
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: