The Great Wall of China: চীনের মহাপ্রাচীর : প্রাচীন সপ্তাশ্চার্য : Kamran Chowdhury
Автор: Kamran Chowdhury
Загружено: 2024-06-29
Просмотров: 676
Описание:
The Great Wall of China: চীনের মহাপ্রাচীর : প্রাচীন সপ্তাশ্চার্য : Kamran Chowdhury
চীনের মহাপ্রাচীর বা (The Great Wall of China) পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তাশ্চার্যগুলোর এক অনন্য নিদর্শন। মানব সৃষ্ট পৃথিবীর একমাত্র স্থাপনা যা খালি চোখে চাঁদ থেকে সুতার মতো দেখা যায়। চীনে অবস্থিত এই মহাপ্রাচীর পাথর ও ইট দিয়ে তৈরি দীর্ঘ নিরাপত্তাবেষ্টনী যা আজ বিশ্ব ঐতিহ্য ও চীনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পৃথিবীর এই দীর্ঘতম প্রাচীরের দৈর্ঘ্য প্রায় ২১,১৯৬.১৮ কিলোমিটার এবং উচ্চতা ৫ থেকে ৮ মিটার। প্রাচীরটি চওড়ায় প্রায় ৯.৭৫ মিটার। প্রশস্ত প্রাচীরের ওপর চলাচলের জন্য রাস্তা করা আছে। কথিত আছে, চীনের মহাপ্রাচীরের ওপর দিয়ে ১২ জোড়া ঘোড়া একসঙ্গে চলাচল করতে পারত।
শখের বশে নয়, এটি তৈরি হয়েছিল নিরাপত্তার জন্য। সে সময় মঙ্গোলিয়া ও মাঞ্চুরিয়ার যাযাবর দস্যুরা অতর্কিত চীনে হামলা করত ও ক্ষতিসাধন করতো। তারা এমনই আচমকা হামলা করত যে তাদের দমন করার প্রস্তুতি গ্রহণের সময়ও থাকত না। এ নিয়ে দারুণ দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় চীনবাসী। তারা চিন্তাভাবনা করে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিলো এক বিশাল প্রাচীর বানিয়ে নিজেদের এলাকা ঘিরে দেয়া হবে।
এই দেয়াল নির্মাণ করার প্রকল্পটি পৃথিবীর অন্যতম ব্যয়বহুল এক প্রকল্প হিসেবে ধরা হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সামরিক অবকাঠামোও এটি। এটিই মানুষের হাতে তৈরি সবচেয়ে বড় স্থাপত্য। খ্রীষ্টের জন্মের ৫ থেকে ৮শ বছর আগে থেকেই চাইনিজরা দেয়াল নির্মাণের কলা কৌশল ভালোভাবেই রপ্ত করে নিয়েছিল। এই সময়ের মাঝে চীনের কিন, ঝাও, কিউ, ইয়ান এবং ঝংসান রাজ্য তাদের নিজেদের নিজেদের বর্ডার রক্ষার্থে বিশাল বিস্তৃত দুর্গ নির্মাণ করে ফেলে। ছোট ছোট আক্রমণ ঠেকানোর মত ব্যবস্থা এসব দুর্গে ছিল। কিন রাজ্যের রাজা ঝেং ২২১ খ্রীষ্ট পূর্বে তার শেষ শত্রুদেরও পরাজিত করে পুরো চায়নায় প্রথম ‘কিন’ বংশের রাজত্ব স্থাপন করেন। তিনি কেন্দ্রীয় শাসন জোড়দার করতে বিভিন্ন রাজ্যের আগের নির্মিত দেয়ালগুলো, যেগুলো সেই রাজ্যকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করে রেখেছিল সেই দেয়ালগুলো ভাঙ্গার নির্দেশনা দিলেন। তবে উত্তর দিক থেকে জিয়াংনু গোষ্ঠির মানুষদের আক্রমণ থামানো যাচ্ছিল না। তাই তিনি এ আক্রমণের হাত থেকে রাজ্যকে রক্ষার জন্য অবশিষ্ট দুর্গগুলোকে সংযুক্ত করে নতুন দেয়াল নির্মাণের নির্দেশ দেন। এ দেয়াল নির্মাণের কাঁচামাল জোগাড় করা তখন বেশ কষ্টসাধ্য এক কাজ ছিল। তাই স্থানীয় যেসব কাঁচামাল পাওয়া যেত তাই দিয়েই কাজ চালানো হত।
খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতক থেকে খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতক পর্যন্ত সময়ে চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য এই প্রাচীর তৈরি করা হয়। এ সময় প্রায় একই রকম অনেক প্রাচীর তৈরি করা হয়েছিল, তবে খ্রিস্টপূর্বাব্দ ২২০ থেকে ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াঙের অধীনে নির্মিত প্রাচীরটিই সবচেয়ে বিখ্যাত। তিনি তার প্রভাবে আশপাশের অন্য রাজাদের একত্র করে নিজে সম্রাট হন। আর তার উদ্যোগেই পোহাই উপসাগরের কূলে শানসিকুয়ান থেকে কানসু প্রদেশের বিয়াকুশান পর্যন্ত তৈরি হয় চীনের মহাপ্রাচীর।
প্রাচীরের মূল অংশের নির্মাণ শুরু হয়েছিল প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ২০৮ সালের দিকে। চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াংই এটি প্রথম ব্যবহার করা শুরু করেছিলেন এবং শত্রুর হাত থেকে নিজের সাম্রাজ্যকে রক্ষার জন্য প্রাচীরটি আরো দীর্ঘ করেন।
পরবর্তীতে হান, সুই, নরদান ও জিং সাম্রাজ্যের সময়েও ইতিহাসে একই কারণে চীনের মহাপ্রাচীরের পরিবর্ধন, পরিবর্তন, সম্প্রসারণ ও পুনর্নির্মাণের উল্লেখ আছে।
বর্তমান প্রাচীরটি মিং রাজবংশের শাসনামলে নির্মিত হয়। সেই প্রাচীরটিও বেইজিংয়ের উত্তরে অবস্থিত। পর্যটকদের জন্য এর কিছু অংশ সংরক্ষণ ও পুনর্নির্মাণ করা হলেও বেশির ভাগ অংশ কালের গর্ভে চলে গেছে। তবু আশ্চর্য এই প্রাচীর দেখতে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ পর্যটক ভিড় করে চীনের উত্তরাঞ্চলে।
প্রাচীরটি চীনের ১৫টি প্রদেশ, কেন্দ্রীয় সরকারের ৯৭টি প্রশাসনিক অঞ্চল এবং ৪০৪টি ছোট ছোট শহরের মধ্য দিয়ে ঘুরেছে। দীর্ঘ এই প্রাচীর ঘিরে পর্যটকদের উৎসাহের শেষ নেই। প্রতি ইঞ্চিতেই যেন বিস্ময়। এর মধ্যেও সবচেয়ে সুন্দর-আকর্ষণীয় কয়েকটি স্থান বিশ্বভ্রমণ পিপাসুদের তালিকায় শীর্ষস্থান করে নিয়েছে।
ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তামানুষের তৈরি বিশ্বের বৃহত্তম কাঠামোর মধ্যে এটিকে গণনা করা হয়। লিকাতেও এর নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হল প্রাচীর নির্মাণের সময় পাথরের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছিল চালের গুঁড়ো। প্রাচীর নির্মাণ করতে গিয়ে মৃত্যু হয় ৪ লক্ষ মানুষের। প্রাচীর নির্মাণ করতে সময় লাগে ২ হাজার বছর। এই প্রাচীরের সর্বোচ্চ উচ্চতা ৩৫ ফিট। এই সম্পূর্ণ ৩৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রাচীরের মধ্যে রয়েছে বিকন টাওয়ার, সিঁড়ি এবং অনেকগুলি সেতু। প্রাচীরের প্রস্থে অনায়াসে গাড়ি চালিয়ে যাওয়া যায়। কোনও একজন সম্রাট নন, প্রাচীর নির্মাণ করেছিলেন চিনের একাধিক সম্রাট। এই প্রাচীর ভেঙে দেশে প্রবেশ করা অসম্ভব। অনেক শত্রু সেনাই এই প্রাচীর ভেঙে চিনকে আক্রমণ করেছিল। ১২১১ প্রাচির ভেঙে চিন আক্রমণ করেন স্বয়ং চেঙ্গিস খান।
১৯৮৭ সালে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে। চীনের মহাপ্রাচীরখ্যাত এই সীমানা দেখতে প্রতি বছর দেশটিতে ভিড় করেন কয়েক লাখ মানুষ। সবুজে মোড়ানো পাহাড়, ঝলমলে রোদ আর নির্মল সিগ্ধ বাতাস ভ্রমণপিপাসুদের নিয়ে যায় স্বপ্নের রাজ্যে। এখানে এলে মেলে প্রশান্তি। বেইজিংয়ের উত্তরে এবং পর্যটন কেন্দ্রের কিছু অংশ সংরক্ষণ- এমনকি পুনর্নির্মাণ করা হলেও দেয়ালের বেশ কিছু অংশ ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো গ্রাম্য খেলার মাঠ এবং বাড়ি ও রাস্তা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় পাথরের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।কালের আবর্তে শুধু চীনের নয় গোটা বিশ্বের গৌরব চীনের এই প্রাচীর আজ অনেকটাই ধ্বংসের মুখোমুখি। তাকে রক্ষায় সচেতন হতে হবে।
Повторяем попытку...
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: