আদ ও সামুত জাতির ধ্বংসের কারণ 15, 2024
Автор: fayzur Rahman Blogs
Загружено: 2024-09-14
Просмотров: 38
Описание:
আদ ও সামুদ জাতির ইতিহাস
তাদের দিয়েছিলেন অফুরন্ত নিয়ামতে ভরা একটি স্বাস্থ্যসম্মত শহর। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অবশ্যই সাবাবাসীদের জন্য তাদের বাসভূমিতে ছিল এক নিদর্শন—দুটি উদ্যান, একটি ডানদিকে, অন্যটি বামদিকে। বলা হয়েছিল, তোমরা তোমাদের রবের দেওয়া রিজিক ভোগ করো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। উত্তম নগরী এবং ক্ষমাশীল রব।আদ ও সামুদ জাতির ইতিহাস থেকে এটা বোঝা যায় যে অত্যাচারী ও সীমা লঙ্ঘনকারীরা শুধু পরকালেই বিচারের সম্মুখীন হবেন না, এই পৃথিবীতেও তারা তাদের প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করেন।আল্লাহ তাআলা তাদের সম্পর্কে জানিয়েছেন যাতে মানুষ সতর্ক হয়। এ দুনিয়ায় মানুষ যতই সুখে থাকুক বা সমৃদ্ধ থাকুক মনে রাখতে হবে সব কিছুই আল্লাহ তাআলার দেয়া। একদিন সবাইকে তার কাছে ফিরে যেতে হবে। কেউ যদি উদ্ধত হয় তাহলে সে যেন এই দুই জাতির কথা জেনে শিক্ষা নেয়।
আদ জাতি
সুরা আরাফের ৬৫ থেকে ৬৮ আয়াতে আদ জাতির সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বর্ণনা দিয়েছেন। আদ জাতি নূহ (আ.)-এর পঞ্চম পুরুষের মধ্যে এবং তার পুত্র সামের বংশধরেরই এক ব্যক্তির নাম।
তারপর তার বংশধর ও গোটা সম্প্রদায় আদ নামেই খ্যাত হয়ে গেছে। প্রসিদ্ধ অভিমত এই যে আদের দাদার নাম ইরাম। 'আদ' ও 'সামুদ' উভয়েই ইরামের দুই শাখা। আদ সম্প্রদায়ের ১৩টি শাখা ছিল।
আম্মান থেকে শুরু করে হাজরামাউত ও ইয়ামান পর্যন্ত তাদের বসতি ছিল। তারা কৃষি কাজ করত। তাদের খেত-খামারগুলো অত্যন্ত সজীব ও শস্য-শ্যামল ছিল। তাদের সব রকমের বাগান ছিল। তারা ছিল সুঠামদেহী ও বিরাট আকৃতির।
আল্লাহ তাআলা তাদের সামনে দুনিয়ার যাবতীয় নেয়ামতের দ্বার খুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু বাঁকা বুদ্ধির কারণে এসব নিয়ামত তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। তারা দম্ভ করে বলতে লাগল, ‘আমাদের চেয়ে শক্তিশালী আর কে?’ তারা এক আল্লাহর ইবাদত ছেড়ে মূর্তিপূজায় আত্মনিয়োগ করে।
আল্লাহ তাআলা তাদের হেদায়েতের জন্য হজরত হুদ (আ.)-কে পাঠিয়েছেন। তিনি ছিলেন তাদেরই পরিবারের একজন। তিনি নূহ (আ.)-এর পঞ্চম পুরুষের মধ্য থেকে সামের বংশধরের এক ব্যক্তি। আদ জাতি এবং হুদ (আ.)-এর বংশতালিকা চতুর্থ পুরুষে সাম পর্যন্ত এসে এক হয়ে যায়। তাই হুদ (আ.) তাদের বংশগত ভাই।
হুদ (আ.) তার জাতিকে শিরকমুক্ত ইবাদতের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘হে আমার জাতি, তোমরা কেবল আল্লাহরই ইবাদত করো। তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোনো উপাস্য নেই। তোমরা কি তাকে ভয় করো না?’
আদ জাতির আগে নূহ (আ.)-এর জাতির ওপর পতিত মহাশাস্তির স্মৃতি মানুষ তখনো ভুলে যায়নি। তাই হুদ (আ.) আজাবের কঠোরতা বর্ণনা করার প্রয়োজন মনে করেননি; বরং এতটুকু বলাই যথেষ্ট মনে করেছেন যে ‘তোমরা কি ভয় করো না?’
হজরত হুদ (আ.)-এর দাওয়াতকে প্রত্যাখ্যান করে আদ জাতির সর্দাররা বলতে লাগল, ‘আমরা তোমাকে নিশ্চিত নির্বুদ্ধিতায় লিপ্ত দেখতে পাচ্ছি। আমাদের ধারণা, তুমি একজন মিথ্যাবাদী।’
হজরত নুহ (আ.)-এর জাতিও তাকে প্রায় একই কথা বলেছিল। উভয় কথার উত্তরও একই। অর্থাৎ ‘আমার মধ্যে কোনো নির্বুদ্ধিতা নেই। ব্যাপারটা কেবল এতটুকু যে আমি বিশ্ব প্রতিপালকের কাছ থেকে রসুল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। আমি তার বার্তা তোমাদের কাছে পৌঁছে দিই। যদিও তা তোমাদের মনঃপূত নয়।’
সামুদ জাতি
সুরা হুদের ৬৭ থেকে ৬৮ আয়াতে সামুদ জাতির সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বর্ণনা করেছেন। প্রবল ক্ষমতাধর সামুদ জাতি আল্লাহ তাআলার আজাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। সেই আজাব থেকে আল্লাহ তাআলা হজরত সালেহ (আ.) ও তার সঙ্গী ইমানদারদের রক্ষা করেছেন। এসব আয়াতে সামুদ জাতির চূড়ান্ত পরিণতি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
এখানে বলা হয়েছে, গগনবিদারী আওয়াজ সামুদ জাতির কর্ণকুহরে আঘাত হানে। সেই আওয়াজে তারা নিজ নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে থাকে। একসময় যে জাতি পাহাড়ে ঘর নির্মাণ করত, পৃথিবীতে যাদের চেয়ে শক্তিশালী কোনো জাতি ছিল না, তারাই আসমানি আজাবে মুখ থুবড়ে পড়ে যায়।
উদ্ধত সামুদ জাতির প্রতি হজরত সালেহ (আ.)-এর হুঁশিয়ারি সত্যিই বাস্তবায়িত হয়েছিল। হঠাৎ একদিন প্রচণ্ড শব্দে ভূমিকম্প তাদের নাস্তানাবুদ করে ফেলে। বজ্রপাতের ভয়ংকর শব্দে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত ও আতঙ্কিত হয়ে যায়। অবশেষে তাদের অপমৃত্যু ঘটে।
সামুদ জাতি শিল্প ও সংস্কৃতিতে পৃথিবীতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। আদ জাতির পর আল্লাহ তাআলা তাদের পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধি দান করেছিলেন। কিন্তু তাদের জীবনযাপনের মান যতটা উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল, মানবতা ও নৈতিকতার মান ততই নিম্নগামী ছিল।
একদিকে উন্মুক্ত প্রান্তরে পাথর খোদাই করে করে প্রাসাদের পর প্রাসাদ তৈরি হচ্ছিল, অন্যদিকে সমাজে কুফর, শিরক ও পৌত্তলিকতার প্রসার ঘটছিল। ন্যায়-ইনসাফ বলে সে সমাজে কিছুই ছিল না। অন্যায় ও অবিচারে সমাজ জর্জরিত হতে থাকে। সমাজে চরিত্রহীন লোকের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। হজরত সালেহ (আ.) যে সত্যের দাওয়াত দিয়েছেন, তাতে সাধারণ শ্রেণির লোকেরাই বেশি সাড়া দেয়।
হিজর ছিল সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় আবাসস্থল। তার ধ্বংসাবশেষ মদিনার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমান শহর আল উলা থেকে কয়েক মাইল ব্যবধানে তা দেখা যায়। মদিনা থেকে তাবুক যাওয়ার পথে এ স্থান প্রধান সড়কের উপরেই রয়েছে। এ উপত্যকার উপর দিয়ে কাফেলা চলাচল করে। কিন্তু রসুল (সা.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী কেউ এখানে অবস্থান করে না।
বিশ্ব পর্যটক ইবনে বতুতা হজে যাওয়ার পথে এখানে পৌঁছেছেন। তিনি লিখেছেন, এখানে লাল রঙের পাহাড়ে সামুদ জাতির দালানকোঠা বিদ্যমান। পাহাড় খোদাই করে তারা এসব বানিয়েছিল। তাদের নির্মিত কারুকার্য এখন পর্যন্ত এতটা জীবন্ত যে মনে হয় এখনই বুঝি তা তৈরি করা হয়েছে। এসব স্থানে এখনো মানুষের পরিত্যক্ত হাড়-হাড্ডি দেখা যায়। প্রবল ক্ষমতাধর সামুদ জাতি এখন শুধুই ইতিহাস।
আদ ও সামুদ জাতির ইতিহাস থেকে এটা বোঝা যায় যে অত্যাচারী ও সীমা লঙ্ঘনকারীরা শুধু পরকালেই বিচারের সম্মুখীন হবেন না, এই পৃথিবীতেও তারা তাদের প্রায়শ্চিত্ত ভোগ করেন।
Повторяем попытку...
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: