জীবন মানে সংগ্রাম: একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার গল্প
Автор: Techno World Video
Загружено: 2025-06-26
Просмотров: 25
Описание:
জীবন মানে সংগ্রাম:
একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার গল্প
জীবন — ছোট্ট একটি শব্দ, কিন্তু এর ভেতর লুকিয়ে আছে হাজারো রঙ, হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ আর সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি, তা হলো সংগ্রাম। জীবনের প্রতিটি ধাপে, প্রতিটি বাঁকে যে সংগ্রাম লুকিয়ে থাকে, তা অনেক সময় মানুষকে ভেঙে ফেলে, আবার কখনও সেই সংগ্রামই মানুষকে নতুন করে বাঁচতে শেখায়। সুমাইয়ার জীবনের একটি অভিজ্ঞতা আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে যাচ্ছি (কল্পনার বাস্তবতা) যেখানে সুমাইয়া উপলব্ধি করেছে — জীবন মানেই সংগ্রাম।
সুমাইয়ার গ্রামের বাড়ি ছিলো নীলগিরির এক ছোট্ট গ্রামে। বাবা ছিলেন একজন কৃষক আর মা গৃহিণী। সংসারে ছিলো অভাব, কিন্তু ছিলো না ভালোবাসার কমতি। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম বাবা কষ্ট করে মাঠে ঘাটে পাহাড়ে কাজ করেন, মা বাড়ির সব কাজ সামলান, আর আমরা ভাই-বোনেরা কখনও খেলাধুলা, কখনও পড়াশোনায় সময় কাটাতাম। কিন্তু অভাবের চাপ যেন সব সময় ঘাড়ের ওপর ছিলো।
স্কুলে পড়াশোনা করার প্রবল ইচ্ছে ছিলো সুমাইয়ার। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু স্কুলে যেতে পারবে কি না, সে নিশ্চয়তা ছিলো না। কারণ অনেক সময় বাড়ির খরচ মেটাতে গিয়ে বাবার পক্ষে সুমাইয়াদের শিক্ষার খরচ চালানো কঠিন হয়ে যেতো। তবুও সুমাইয়ার চেষ্টা করত, পুরনো বই, ছেঁড়া খাতার পাতায় যেন নিজের ভবিষ্যৎ আঁকতে পারে।
একটা ঘটনা সুমাইয়ার জীবন পুরো বদলে দেয়। ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় সুমাইয়ার বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাঠে কাজ করতে করতে হঠাৎ একদিন পড়ে যান। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে জানা গেলো, সুমাইয়ার বাবার হার্টে সমস্যা। চিকিৎসা করাতে হবে, না হলে অবস্থা খারাপ হবে। কিন্তু চিকিৎসার খরচ? সুমাইয়াদের কাছে যা ছিলো, তা দিয়ে মাসের বাজারও হয় না, সুমাইয়ার বাবার চিকিৎসা তো অনেক দূরের কথা।
তখনই সুমাইয়ার জীবনের প্রথম বড় সংগ্রামের শুরু। সুমাইয়ার পড়াশোনার পাশাপাশি গ্রামে ছোটখাটো কাজ শুরু করে। কারও জমিতে ঘাস কাটত, কারও বাড়িতে গিয়ে হাঁস-মুরগি সামলাতো। যা আয় হতো, তা মায়ের হাতে তুলে দিতো। সুমাইয়ার মা সংসার চালাতেন, আর সুমাইয়া বাবার চিকিৎসার জন্য টাকা জমাতো। স্কুলে যাওয়া হতো কখনও কখনও, কিন্তু মন সব সময় বাবার চিন্তায় ভরা থাকতো।
বাবার চিকিৎসা চলতে লাগলো, ধীরে ধীরে একটু উন্নতি হলো, কিন্তু সংসারের অবস্থা আরও খারাপ হলো। তখন মনে হলো, হয়তো জীবনে বড় কিছু করা সুমাইয়ার পক্ষে সম্ভব না। বন্ধুদের কেউ কেউ শহরে চলে গেলো, কেউ ভালো স্কুলে ভর্তি হলো, আর সুমাইয়ার জীবনযুদ্ধে আটকে গেলো।
কিন্তু একটা সময় সুমাইয়া বুঝতে পারলো, এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার জন্য শুধু হতাশা নয়, দরকার ধৈর্য, চেষ্টা আর আত্মবিশ্বাস। সুমাইয়া নতুন করে পড়াশোনা শুরু করলো। রাতে কেরোসিনের বাতির আলোয় বই পড়তো, দিনে কাজ করতো। অনেকেই বলতো, “ওর পক্ষে কিছুই হবে না”, কিন্তু সুমাইয়ার ভেতরে ভেতরে জেদ পুষে রাখতো।
এসএসসি পরীক্ষার সময় জীবনের সবচেয়ে বড় লড়াইটা করতে হলো। একদিকে টাকার অভাব, অন্যদিকে নিজের স্বপ্ন। মায়ের গয়না বিক্রি করে পরীক্ষা দিলো সুমাইয়া। পরীক্ষার ফল বের হলো, সুমাইয়া প্রথম বিভাগ পেলো। মনে হচ্ছিলো, জীবনের অন্ধকারে একটু আলো ফুটলো। কিন্তু সংগ্রাম তো এখানেই শেষ নয়। উচ্চ মাধ্যমিক, তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি — প্রতিটা ধাপই ছিলো কঠিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারলেও শুরু হলো আরেক লড়াই। শহরে থাকার জায়গা, খাওয়া-দাওয়া, পড়ার খরচ — সব কিছু নিজেকেই সামলাতে হতো। দিনভর ক্লাস করে সন্ধ্যায় টিউশনি করতো। কখনও কাপড়ের শো-রুমে কাজ করেছে, কখনও অফিসে পার্ট-টাইম চাকরি করেছে। বন্ধুরা যখন আড্ডা দিতো, সিনেমা দেখতো, সুমাইয়া তখন টিউশনি করতো। মনে হতো, জীবন বোধহয় সুমাইয়াকে একটু বেশি কষ্টের মধ্য দিয়ে বড় করছে।
কিন্তু সেই কষ্টই আজ সুমাইয়ার সবচেয়ে বড় সম্পদ। কারণ সুমাইয়া জানে, সংগ্রাম না থাকলে সফলতার মূল্য কেউ বুঝতে পারে না। চার বছরের পড়াশোনা শেষ করে সুমাইয়া একটি ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেলো। বাবা-মায়ের মুখে হাসি দেখলো অনেক দিন পর। সুমাইয়া সংসারের দায়িত্ব নিতে পারলো। ছোট ভাই-বোনদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করলো।
সুমাইয়া আজ যখন পেছনে ফিরে তাকাইয়, তখন বুঝতে পারে, ছোটবেলার সেই কঠিন সময়, সেই দিনরাতের শ্রম, মায়ের চোখের জল, বাবার অসুস্থতা — সব কিছুই সুমাইয়াকে শিখিয়েছে যে, জীবন মানেই সংগ্রাম। জীবনের পথে বাঁধা আসবেই, কিন্তু সেই বাঁধাকে পেরিয়ে যে এগিয়ে যেতে পারে, তার জন্যই অপেক্ষা করে সফলতা।
অনেক সময় সুমাইয়ার মনে হয়, অন্যদের জীবন সহজ, আর আমাদের জীবন কঠিন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সবার জীবনেই সংগ্রাম আছে, শুধু রূপটা ভিন্ন। কেউ অর্থনৈতিক সংগ্রাম করে, কেউ সম্পর্কের টানাপোড়েন সামলায়, কেউ মানসিকভাবে লড়াই করে, কেউ আবার নিজের স্বপ্নকে টিকিয়ে রাখার জন্য যুদ্ধ করে।
সুমাইয়া শিখেছে, দুঃসময় কখনও চিরস্থায়ী নয়। কিন্তু দুঃসময়ে হার না মানার মনোভাব চিরস্থায়ী হতে পারে। জীবনের প্রতিটি অভিজ্ঞতা আমাদের আরও পরিণত করে, আরও শক্ত করে। আর সেই শক্তি দিয়েই আমরা একদিন জয় করি নিজেদের জীবন, নিজের স্বপ্ন, নিজের পরিবার।
শেষ কথা হলো, জীবন মানেই সংগ্রাম। আর সেই সংগ্রামের ভেতরেই লুকিয়ে আছে জীবনের আসল সৌন্দর্য। তাই হতাশ হওয়া নয়, এগিয়ে যাওয়াই আমাদের দায়িত্ব।
Повторяем попытку...
Доступные форматы для скачивания:
Скачать видео
-
Информация по загрузке: