👉 “বাহিরে সংযম, ভিতরে আগুন? কৃষ্ণ বললেন সেটাই ভণ্ডতা।”

Описание: 👉 “বাহিরে সংযম, ভিতরে আগুন? কৃষ্ণ বললেন সেটাই ভণ্ডতা।”

📜 শ্রীমদ্ভাগবদ্ গীতা – অধ্যায় ৩ (কর্মযোগ), শ্লোক ৬

🕉️ संस्कृत (Sanskrit):
कर्मेन्द्रियाणि संयम्य य आस्ते मनसा स्मरन् ।
इन्द्रियार्थान् विमूढात्मा मिथ्याचारः स उच्यते ॥

🕉️ বাংলা-সংস্কৃত (বাংলা অক্ষরে সংস্কৃত রূপ):
কর্মেন্দ্রিয়াণি সংযম্য য আস্তে মনসা স্মরন্।
ইন্দ্রিয়ার্থান্ বিমূঢ়াত্মা মিথ্যাচারঃ স উচ্যতে॥

🔊 বাংলা উচ্চারণ (Transliteration):
কর্মেন্দ্রিয়াণি সংযম্য (কর্ম করার অঙ্গগুলো সংযত করে)
যঃ — যিনি
আস্তে — বসে থাকেন
মনসা — মনে মনে
স্মরন্ — স্মরণ করেন, চিন্তা করেন
ইন্দ্রিয়ার্থান্ — ইন্দ্রিয়ের বিষয় (ভোগবস্তু)
বিমূঢ়াত্মা — বিভ্রান্তচিত্ত ব্যক্তি
মিথ্যাচারঃ — ভণ্ড, ছলনাকারী
সঃ উচ্যতে — তাকেই বলা হয়।

🪔 বাংলা অনুবাদ:
যে ব্যক্তি বাহ্য ইন্দ্রিয়গুলো দমন করে বসে থাকে, কিন্তু মনে মনে ইন্দ্রিয়ভোগের চিন্তা করে, সে আসলে বিভ্রান্ত আত্মা সংযমী নয়, ভণ্ডাচারী।

📖 শব্দে শব্দে অর্থ (Word-by-word meaning):
কর্মেন্দ্রিয়াণি = কাজ করার অঙ্গ (হাত, পা, জিহ্বা, চোখ, কান)
সংযম্য = সংযত করে রাখা
যঃ আস্তে = যে বসে থাকে, নিষ্ক্রিয়ভাবে থাকে
মনসা স্মরন্ = মনে মনে চিন্তা করে
ইন্দ্রিয়ার্থান্ = ইন্দ্রিয়ের আনন্দের বিষয়গুলো
বিমূঢ়াত্মা = বিভ্রান্ত মনযুক্ত ব্যক্তি
মিথ্যাচারঃ = ভণ্ড আচরণকারী
স উচ্যতে = তাকেই বলা হয়

✨ তাৎপর্য ব্যাখ্যা (Essence / Explanation):
“অর্জুন, দেখ, অনেকেই ভাবে চুপ করে বসে থাকলেই যোগী হওয়া যায়।
কাজ না করলেই, চোখ বন্ধ করলেই, মন শান্ত হবে। কিন্তু আমি বলি যদি মন এখনও ইন্দ্রিয়ভোগের মোহে বাঁধা থাকে, তাহলে বাহ্যিক সংযম কোনো অর্থই রাখে না।

তখন সেই মানুষ সংযমী নয় অভিনয়কারী।”
ভাবো একবার, তুমি যদি মুখে বলো “আমি সবকিছু ত্যাগ করেছি,” কিন্তু ভিতরে ভিতরে এখনও নাম, টাকা, প্রশংসা, আসক্তি এইসবের চিন্তায় জড়িয়ে থাকো,তাহলে তোমার ত্যাগটা আসলে নাটক ছাড়া কিছু নয়।

সংযম মানে দমন নয় বোঝা। তুমি যদি শুধু চাপা দাও, সেটা একদিন ফেটে বেরোবে।
যেমন আগুন ঢেকে রাখলে ধোঁয়া বের হয়ই।
আমি বলছি, অর্জুন, যে নিজের মনকে বোঝে, নিজের ইচ্ছাকে চেনে, সে-ই আসলে সত্য যোগী।

কারণ সে জানে কোন ইচ্ছা তাকে টানে, আর কোন ইচ্ছা তাকে মুক্ত করে।

🌿 বাস্তবমুখী উদাহরণ (Real-life Application):
ভাবো, একজন মানুষ আছে নাম ধরা যাক, রোহিত।

রোহিত বলে, “আমি এখন সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে দিয়েছি। আমি সম্পূর্ণ শান্তিতে আছি।”
কিন্তু মনটা সারাক্ষণ ভাবছে “কে কী পোস্ট করল? কে আমার কথা বলছে?”

সে বাহ্যত শান্ত, কিন্তু ভিতরে আগুন।
আরেকজন মীরা। সে প্রতিদিন কাজ করে, পরিশ্রম করে, হাসে, কিন্তু ভিতরে স্থির।
সে জানে অন্যরা কী করছে সেটা তার শান্তি নষ্ট করতে পারে না।

সে তার কাজেই ঈশ্বরকে খোঁজে। রোহিত বাহিরে সংযমী, মীরা ভিতরে মুক্ত। আর কৃষ্ণ বলছেন “মীরা-ই যোগিনী, রোহিত নয়।”

🌼 যদি ব্যাসদেব এই শ্লোকের ভাব বলতেন, তিনি হয়তো বলতেন

“সত্য সংযম হলো অন্তরের ত্যাগ।
যে মন ভোগের চিন্তা থেকে মুক্ত, সে কর্ম করেও সংযমে থাকে। কিন্তু যে ভিতরে অস্থির, সে পাহাড়েও গিয়ে শান্তি পাবে না।”

কৃষ্ণ বলছেন, সংযম মানে দমন নয় অন্তরের মুক্তি। তুমি যদি শুধু বাহিরে শান্ত দেখাও, কিন্তু ভিতরে ঝড় বয়ে চলে, তাহলে সেই শান্তি মিথ্যা।

🪔 শেষে কৃষ্ণ যেন নিজেই বলছেন তোমাকে:
“দেখ, বাইরে চুপ থাকা সহজ, কিন্তু মন চুপ করানোই আসল সাধনা। তোমার সংযমকে মুখে নয়, মনে রাখো কারণ আমি তোমার মনে বাস করি, চোখে নয়।” 🌿

এই শ্লোক শুনলে বুঝবে, সত্যিকারের যোগ আসলে কোথায়।

#BhagavadGita #শ্রীকৃষ্ণ #GitaWisdom #KrishnaSpeaks #GeetaQuotes #LifeLessons #SpiritualJourney #Bhakti #MindControl #InnerPeace